মঙ্গলবার সবার আগে এই টিকা নেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্যা সালাম সমতা। ঢাকা মেডিকেল ছাড়াও মুগদা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের এ টিকা দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঢাকা মেডিকেল কলেজে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করে বলেন, “যারা ফ্রন্টলাইনার, তাদের আগে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি মেডিকেল শিক্ষার্থী, বিশেষ করে ফিফথ ইয়ারে যারা আছেন, তাদের টিকা দিয়ে সুরক্ষিত করতে হবে। তারা ইন্টার্ন শেষে বিভিন্ন হাসপাতালে মানুষের সেবা দেবেন।”
এতদিন বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছিল শুধু ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ড।
কিন্তু ভারত রপ্তানি বন্ধ রাখায় বাংলাদেশকে এখন নতুন উৎস থেকে টিকা আনার চেষ্টা করতে হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সিনোমফার্মের বিবিআইবিপি-করভি (BBIBP-CorV) এবং রাশিয়ার তৈরি স্পুৎনিক-ভি টিকা বাংলাদেশে জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গত ১২ মে সিনোফার্মের টিকার ৫ লাখ ডোজ বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়, যা চীন সরকার উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে। আরও ৬ লাখ ডোজ টিকা চীন উপহার হিসেবে দেবে বলে জানিয়েছে।
কোভিশিল্ডের মত সিনোফার্মের টিকাও নিতে হবে দুই ডোজ করে। উৎপাদকদের ভাষ্য, পরীক্ষামূলক প্রয়োগে তাদের টিকা ৭৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ কার্যকরিতা দেখিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ঢাকার চার মেডিকেল কলেজের এক হাজার শিক্ষার্থীকে সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হবে। যেহেতু বাংলাদেশে এ টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ আগে হয়নি, সেহেতু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী প্রথম টিকা পাওয়া ওই এক হাজার জনকে কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
সব ঠিক থাকলে দশ দিন পর দেশের অন্যান্য মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদেরও এই টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ভারতে কোভিড থেকে সেরে ওঠা অনেক রোগীর মধ্যে যে ব্ল্যাক ফাংগাসের সংক্রমণ বা মিউকরমাইকোসিস দেখা দিচ্ছে, বাংলাদেশেও একজন রোগীর মধ্যে তা ধরা পড়েছে। টিকাদান অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।
উত্তরে তিনি বলেন, এ নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার ‘কিছু নেই’।
“আমি সবার সঙ্গে কথা বলছি বিষয়টি নিয়ে। কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেছি, ব্ল্যাক ফাংগাসের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ তৈরির নির্দেশ দিয়েছি।”
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. লোকমান হোসেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিয়া, পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক এবং স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
সূত্র, বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম